বাংলাদেশের দক্ষিনের ভোলা জেলার চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নে চর কুকরি মুকরি অবস্থিত। ১০ কিলোমিটার লম্বা এবং ৯.৫ কিলোমিটার প্রসস্থ বিশিষ্ট মোট ২৫ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এই চর কুকরি মুকরি বিস্তুত। ভোলার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে মেঘনার মোহনায় সাগরের তীর ঘেঁষে এর অবস্থান। চারিদিকে অজস্র জলরাশি এবং উত্তাল মেঘনার ঢেউয়ে পলি পড়ে এই দ্বীপটির জন্ম হয়েছে। এখানে মেঘনার ঢেউ দেখলে মনে হবে আপনি সাগরের তীরে বসে আছেন। সাগরের তীর ঘেঁষে তৈরি হওয়ায় এই দ্বীপটিকে স্বপ্নের সুন্দর দ্বীপ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।
এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহৎ বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। চারিদিকে অসংখ্য কেওড়া গাছ চোখে পড়বে এছাড়াও আরো চোখে পড়বে নানা প্রজাতির বৃক্ষ যেমন বাঁশ , বেত, নারকেল গাছ ইত্যাদি। এখানকার মানুষ সাধারনত মৎস শিকার এবং কৃষি কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এখানে বনের পরিমান ৮৫৬৫ হেক্টর যার মধ্যে বন্য প্রানীদের আশ্রয়স্থল হল প্রায় ২২০ হেক্টর। এই বনে নানা জাতের প্রাণী দেখা যায় হরিণ, বানর , শেয়াল, মহিষ, গরু বিড়াল, বনমোরগ এবং নানা জাতের সরিসৃপ।
শীতকালে অতিথি পাখির আগমনে চর মুখরিত থাকে চারদিক। শীতকালে হাজার হাজার পর্যটক ভির করে এই চর কুকরি মুকরির অপরূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য। চর কুকরি মুকরির ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল যার নাম ভাড়ামি খাল। মেঘনার বুক থেকে খালটি শুরু হয়ে খালটি মিশে গেছে বঙ্গোপসাগরের সাথে। চরের চারিদিকের ধূ ধূ বালি আড়ির সাথে উত্তাল সাগরের গর্জনের শব্দ আপনাকে আকর্ষন করতে বাধ্য। সকালের সূর্যদয় এবং বিকালের সূর্যাস্তের সৌন্দর্য আপনাকে বিমোহিত করবেই। এই সূর্যাস্ত এবং সূর্যদয়ই হলো এখানকার মূল আকর্ষন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট লঞ্চঘাট টার্মিনাল থেকে ভোলার উদ্দেশ্য সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮ টার মধ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। পরদিন সকাল ৫ টা বা ৬ টার মধ্যে ভোলার বেতুয়া ঘাট পৌছায় । সেখান থেকে অটোতে করে চলে যাবেন চর ফ্যাশন বাস টার্মিনাল। সেখান থেকে বাসে করে চর কচ্ছোপিয়া আর সেখান থেকে আবার অটোতে দক্ষিন আইচা ঘাট। তারপর সেখান থেকে ট্রলারে চর কুকরি মুকরি।
কোথায় থাকবেন
চর কুকরি মুকরিতে একটি বন বিভাগের রেষ্ট হাউস আছে চাইলে সেখানে রাত কাটানো সম্ভব। প্রতিটি রুমে ২ থেকে ৩ জন ভাল মতই থাকতে পারবেন। তবে যাওয়ার আগে বুকিং করে যাওয়া ভাল। তাছাড়া আবহাওয়া ভাল থাকলে সেখানে ক্যাম্পিং করা ও সম্ভব।
কোথায় খাবেন
চর কুকরি মুকরি বাজারে ২-৩ টি খাবারের হোটেল আছে। আগে বলে রাখলে খাবারের জন্য টেনশন করতে হবে না। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের রেষ্ট হাউসে আলোচনা সাপেক্ষে খাবারের ব্যবস্থা আছে।
No comments:
Post a Comment